মোঃ উজ্জ্বল শেখ, উদ্যোক্তা, বাগাট ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, বাগাট, মধুখালী, ফরিদপুর।,মোবাইলঃ ০১৯১১-৩১২২০৭
বাল্যকাল থেকেই দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে এসেছি। অর্থের অভাবে বেশি লেখাপড়া করতে পারি নাই। অভাব অনটনের কারনে কখনও কখনও না খেয়েও দিন যাপন করতে হয়েছে, বাবা অসুস্থ থাকায় খুব ছোট বেলা থেকেই সংসারের বোঝা কাধে নিতে হয়েছে। পরিবারের খাবার যোগান দেওয়ার পাশাপাশি যখনই একটু সময় পেয়েছি লেখাপড়াটা চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট করেছি কিন্ত কখনও আত্ববিশ্বাস হারায় নাই। বাবা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ (দফাদার) থাকায় এবং সে অসুস্থ থাকায় তার বদলী ডিউটি করতে এসে ইউনিয়ন পরিষদের সাথে আমার একটা সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অন-লাইন ও অফ-লাইন সেবা দিয়ে উপার্জন শুরু করি । আত্ববিশ্বাস আর পরিশ্রই যে একজন মানুষকে সাফল্য এনে দিতে পারে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সেটা আমি ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারি। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি ডিজিটাল সেন্টারের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের সেক্রেটারীয়াল কাজ করার মাধ্যমে আমি একজন সফল উদ্যোক্তা।
তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়, চরম দারিদ্রোর মধ্যেও পড়াশোনা চালান। ২০০১ সালে এসএসির পর ২০০৩ সালে এইচএসসি পাস করি। বাজারের কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রশিক্ষন নেওয়ার মত কোন অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল না। তবুও সময় পেলে বাজারের দোকানে গিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখেছি কিভাবে কাজ করতে হয়। তখন থেকেই মনের মধ্যে প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি কাজ করে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার। ২০০৫ সালে শতভাগ জন্ম নিবন্ধন করার পুরস্কার স্বরুপ ইউএনডিপি থেকে বাগাট ইউনিয়ন পরিষদকে কম্পিউটার দেওয়া হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগাই হাতে কলমে কাজ শেখার। বাজারের দোকানে দাড়িয়ে দেখা কাজগুলো হাতে কলমে শেখার চেষ্টায় কম্পিউটারের ওপর মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, ফটোসপসহ ইন্টারনেট সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করি।
২০১১ সালে অত্র ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে আবেদন করি। এবং চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে বাগাট ডিজিটাল সেন্টার (তৎকালীন বাগাট ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র, ইউআইএসসি) তে কাজ শুরু করি। ২০১১ সালে এটুআই কর্মসূচির আওতায় কম্পিউটারের ওপর আইসিটি, ইন্টারনেট ও ডিজিটালাইজড বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহন করি। এখানে ১টি ডেক্সটপ ও ১টি ল্যাপটপ কম্পিউটার, ১টি লেজার ও ১টি কালার প্রিন্টার্স, ১টি প্রজেক্টর, ১টি আইপিএস, ১টি স্ক্যানার ও নিজেস্ব অন্যান্য উপকরণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ১০-১২ রকম সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন শিক্ষিত যুবক ও যুব মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তারা বর্তমানে আয়মূলক কার্যক্রমে জড়িত রয়েছেন। বর্তমানে এ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাসিক পরিচালনা ব্যয় বাদ দিয়েও মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ১২-১৫ হাজার টাকা।
এখন থেকে নামজারীর অনলাইন আবেদন, ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং এর কাজ চলমান রয়েছে, এছাড়াও “মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড” এর মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকি সেবা শুরু করতে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে আমি প্রতিস্রুতিবদ্ধ।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS